এসবিএন ডেস্ক:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মচমইল সৈয়দপুর বকপাড়ায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মসজিদে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের সময় এ ঘটনা ঘটে। হামলার পর পুলিশ পাহারায় আহমদিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ ওই মসজিদে মাগরিব ও এশার নামাজ আদায় করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বোমা বহনকারী নিহত যুবকের পরিচয় মেলেনি। বাগমারা থানার এসআই আসাদুজ্জামান বলেন, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ২টার দিকে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য নিহত যুবকের লাশ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হামলাস্থল ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ওই সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জুমার নামাজ শুরুর পর প্রথম রাকাত আদায় হয়। দ্বিতীয় রাকাতে যাওয়ার সময় বোমা বহনকারী ওই যুবক তার পেটে বেঁধে রাখা বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটান। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। এ ছাড়া আহত হন শিশুসহ অন্তত ১০ জন। আহতদের মধ্যে বাগমারায় মচমইল সৈয়দপুর এলাকার বলাই তালুকদারের ছেলে ময়েজ উদ্দিন (৪০) সায়েব আলী (৩৬) ও মুকুল হোসেনের ছেলে নয়নকে (১২) রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ময়েজ ও সায়েবের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। ঘটনার পরই এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে, খবর পেয়ে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করেন। পরে মসজিদটি ঘিরে রাখেন তারা। হামলাকারীদের আরো কেউ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন কিনা- তা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওই মসজিদের আহত মুসল্লি ময়েজ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, বোমা হামলাকারী যুবকটি মসজিদের পেছনের কাতারে ছিল। নামাজ শুরুর আগে কয়েকজন মুসল্লি ওই যুবকটির পরিচয় জানতে চাইলে সে মচমইল এলাকায় তার এক বন্ধুর বাসায় বেড়াতে এসেছে বলে মসজিদের মুসল্লিদের জানায়। সে রাজশাহী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী এবং তার বাড়ি জেলার মোহনপুরে বলেও মুসল্লিদের জানায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, নামাজ শুরুর আগেও তার মুখে একটি নীল রংয়ের মাফলার বাঁধা ছিল। কালো জ্যাকেট ও জিনস প্যান্ট পরা যুবকটির মুখে হালকা দাড়ি রয়েছে। বোমায় তার বাম হাত এবং পেটসহ শরীরের বেশকিছু অংশ জখম হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি। বাগমারা থানার ওসি মতিয়ার রহমান কালের কণ্ঠকে জানান, বোমা হামরাকারী নিজেই নিহত হয়েছেন। বোমাটি তার পেটে বাঁধা ছিল। ওই মসজিদের সভাপতি সাইফুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, এর আগে কখনও যুবকটিকে দেখিনি। আহমদিয়া মসজিদ হওয়ায় আজও বরাবরের মতো আগেভাগেই নামাজ শুরু হয়। নামাজ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই বিকট শব্দে চারিদিক কেঁপে ওঠে। এ সময় মুসল্লিদের চিৎকারে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।